২১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৩শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

বাঁশখালীতে চর্মরোগ এখন প্রতিটি ঘরে ঘরে,অবহেলায় রূপ নিতে পারে মহামারিতে

বাংলার বারুদ
প্রকাশিত মে ২০, ২০২৫, ০৭:৫০ পূর্বাহ্ণ
বাঁশখালীতে চর্মরোগ এখন প্রতিটি ঘরে ঘরে,অবহেলায় রূপ নিতে পারে মহামারিতে

◻️ জসিম তালুকদার, চট্টগ্রাম :

একটি অদৃশ্য কিন্তু ভয়ংকর অসুখ দিনের পর দিন বাড়ছে স্ক্যাবিস নাম চর্মরোগ। দরিদ্র, প্রান্তিক এবং স্বাস্থ্যসেবার বাইরে থাকা মানুষ গুলোর জীবনে যন্ত্রণা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। প্রতিটি ঘরের পরিবারের সদস্যদের কোন না কোন সদস্যর মাঝে চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। নামটি খুবই পরিচিত স্ক্যাবিস। অতি সাধারণ এক ধরনের চর্মরোগ হলেও, আমাদের অসচেতনতা ও অবহেলার কারণে এটি একটি ঘরভর্তি মানুষকে আক্রান্ত করে নিমিষেই।

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলাতে পূর্বের চেয়ে বর্তমানে চর্মরোগ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে :

সোমবার (১৯ মে) জানিয়ে বাঁশখালী সন্তান ও বেটার লাইফ হসপিটাল লিঃ এর কনসালটেন্ট চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ দূর্বার দে দৈনিক আজকের বাংলা পত্রিকার চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি জসিম তালুকদার কে বলেন,স্ক্যাবিস মূলত একধরনের ছোঁয়াচে চর্মরোগ, যা এক ধরনের ক্ষুদ্র পরজীবীর কারণে হয়। এই পোকাটি মানুষের ত্বকের নিচে গর্ত করে ডিম পাড়ে এবং চুলকানি ও র‌্যাশ সৃষ্টি করে। রোগটি অত্যন্ত সংক্রামক, সহজে একজন থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষত শীতে শুষ্কতা কারণে কম বৃদ্ধি হলেও গরমকালে ঘাম সৃষ্টির কারণে বৃদ্ধিপায়। এবং মে,জুন জুলাই, আগষ্ট মাসে আরো বৃদ্ধি পেতে পারে।

তিনি আরো জানান, এই রোগের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পায় রাত হলে, তীব্র চুলকানি ও লাল ফুসকুড়ি ও অনেক সময় চুলকানির স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি দিনভর ক্লান্তি বোধ করে। স্ক্যাবিস কোনো নতুন রোগ নয়। কিন্তু এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রয়োজন গণসচেতনতা, স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা। অনেক সময় দেখা যায়, মানুষ এটিকে গরম পানি, সাবান বা ভেষজ তেল, এন্টিবায়োটিক দিয়ে সারানোর চেষ্টা করেন। অথচ স্ক্যাবিস নিরাময়ের জন্য প্রয়োজন পারমেথ্রিন বা আইভারমেকটিন-জাতীয় ওষুধ, যেটি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করা উচিত নয়।

চট্টগ্রামের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক ডাঃ নাগিনা সুলতানা বলেন :

অবহেলার কারণে মহামারির রূপ নেয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের সমাজে এই রোগটিকে এখনো ‘তুচ্ছ’ মনে করা হয়। একটি সাধারণ চর্মরোগ অবহেলার কারণে মহামারিতে রূপ নেয় যদি তাহলে সেটি কেবল একজন ব্যক্তির সমস্যা নয়, বরং সামগ্রিক জন স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। তাই সময় এসেছে স্ক্যাবিসকে আর অবহেলা না করার। স্কুল, মাদ্রাসা, হোস্টেল, গার্মেন্টস, শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীর মাঝে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে স্ক্যাবিস সম্পর্কে প্রচারণা চালানো, প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া এবং নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা চর্চার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা যদি চাই একটি সুস্থ সমাজ গড়ে তুলতে, তবে আমাদের শুরু করতে হবে এই ছোট ছোট জায়গা থেকেই। স্ক্যাবিস ছোট রোগ হতে পারে, কিন্তু এর বার্তা বিশাল। স্বাস্থ্য সচেতনতা কোনো খামখেয়ালির বিষয় নয়।