১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

পশ্চিমে বেড়িবাঁধ ও পূর্বাঞ্চলে খাল ভরাট, উভয় সংকটে বাঁশখালী

বাংলা বারুদ
প্রকাশিত জুন ১, ২০২৫, ০৯:১৩ অপরাহ্ণ
পশ্চিমে বেড়িবাঁধ ও পূর্বাঞ্চলে খাল ভরাট, উভয় সংকটে বাঁশখালী

Manual8 Ad Code

◻️ জসিম তালুকদার, চট্টগ্রাম:

Manual3 Ad Code

রোববার (১ জুন) সকালে উপকূলীয় এলাকা ও পাহাড়ি জনপদ ঘুরে দেখা যায়, চট্টগ্রাম বাঁশখালী উপজেলার পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর পূর্ব দিকে পাহাড়ি জনপদে ঘেরা এই উপজেলা। ঘুর্ণিঝড় প্রভাবে ও টানা বর্ষণের ফলে উভয় এলাকায় প্লাবিত হয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হয় অত্র এলাকার বাসিন্দাদের। বাঁশখালী অঞ্চলের মানুষ জনের স্বাভাবিক জীবনের কর্মকাণ্ড অনেকাংশে থমকে যায়।

ঘূর্ণিঝড় বা প্রবল ঝড় ও স্বাভাবিকের চাইতে অতিমাত্রায় সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস হলে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপকূলের খানখানাবাদ, সাধনপুর, পুকুরিয়া, বাহারছড়া, সরল, গন্ডামারা, ছনুয়াসহ বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ উপচে পড়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে উপকূলীয় নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়। কারণ টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকার ফলে লোকালয়ে লোনাপানি চলে এসে প্লাবিত হয় এলাকায়।

বাঁশখালীর পূর্বাঞ্চলে, পুকুরিয়া, সাধনপুর, কালীপুর, চেচুরিয়া, জঙ্গল জলদী, পূর্ব শীলকূপ, ছনুয়া এলাকাতে পাহাড়ি ঢলে ডুবে গিয়ে দূর্দশা নেমে আসে জন জীবনে। ফসলাদি সহ কাঁচা দেয়ালের বাড়ীঘর নষ্ট হয়। খাল ও ছড়া জনগুরুত্বপূর্ণ হলেও নানাভাবে দখলদারের দখলদারত্বে থাকায় বর্তমানে পানিনিষ্কাশনে বাধাগ্রস্ত হয়ে সাধারণ জনগণ সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

সরজমিনে ঘুরে ও এলাকার জনসাধারণের কাছে জানা যায়, পাহাড় থেকে সৃষ্ট ছড়া-খাল ভরাট হয়ে যাওয়াতে অতি বৃষ্টির ফলে পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার ফসল নষ্ট হয় অনেক হেক্টর জমির।

Manual7 Ad Code

দখল-দূষণে বাঁশখালী ২৯ টি সরকারি খাল ও ছড়া। বর্জ্যে ভরাট হয়ে গেছে অনেক খাল। ফলে পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বিভিন্ন ব্যক্তি-গোষ্ঠী খাল দখল করে গড়ে তুলেছে নানান স্থাপনা। পূর্বে পাহাড় ও পশ্চিমে সাগর, মাঝখানে জলকদর খাল। বিভিন্ন ইউনিয়নের খালের এ পাড়ে-ওই পাড়ের সঙ্গে সংযোগ খাল বা ছাড়াগুলো হচ্ছে ২৮ টি ছড়া মিলেছে জলকদর খালে। ২৮ টি খাল গুলো নিয়ে জলকদর গিয়ে মিলেছে এই শঙ্খ নদীতে। শঙ্খ মিশেছে বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে। উপজেলার পূর্বাঞ্চলের ছড়ার প্রবাহিত পানি খালে নামার জন্য অবস্থিত অধিকাংশ সুইসগেট নানাভাবে দখল ও বন্ধ থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই বন্যার সৃষ্টি হয় খালের পূর্বাঞ্চল জুড়ে থাকা বাঁশখালীর বিভিন্ন ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চল।

Manual2 Ad Code

শীলকূপের বাসিন্দা জমির উদ্দীন বলেন,অল্প বৃষ্টি হলেই বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে কৃষকের ফসলি জমি। ফলে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন কৃষক থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ। খালের তীরে গড়ে উঠেছে বহুতল ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনা। চর ও বাঁধ দখল করে গড়ে উঠেছে জনবসতি। অবৈধ বসতি উচ্ছেদ সহ খাল গুলো খনন জরুরী মনে করি।

জলদী,পাইরাং, ছনুয়া ও বৈলছড়ী, খানখানাবাদের বাসিন্দারা জানান, বছরে বছরে সরকারি ভাবে খাল খনন প্রকল্প দিয়ে পরিষ্কার করা হলেও দখলকৃতদের বিরুদ্ধে তেমন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আর উপকূলের টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ এবং পূর্বাঞ্চলে খাল ও ছড়াগুলো খনন করে পুনরুদ্ধার করা হলে বর্ষায় হাজার হাজার একর জমি ঢলের পানি থেকে রক্ষা পাবে।

দঃ জলদীর পাহাড়ি বসবাসকারী নুরুল আবছার বলেন, দখলকৃত সরকারি খাল গুলো মুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আকুল আবেদন। আশা করি অতি শ্রীঘই জনস্বার্থে বাঁশখালীর উপকূলীয় টেকসই বেড়িবাঁধ সংস্কার ও পূর্বাঞ্চলের পুরোনো খাল ছড়া গুলো খননের কাজটি সফল করতে উদ্যোগ নিবেন বলে আশাবাদী এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

Manual6 Ad Code