মো কামরুল হোসেন সুমন,মনপুরা:
চরফ্যাশন- মনপুরা (ভোলা ৪) আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ইতোমধ্যে ভোলা-৪ (চরফ্যাশন-মনপুরা) আসনে দৌড়াজোপ শুরু করেছেন বিএনপির একাধিক মনোয়ন প্রত্যাশী নেতারা। তারা নিজ নিম্ন কর্মী সমর্থকদের নিয়ে মাঠে তৎপরতা চালাচ্ছেন।
অন্যদিকে, জামায়েত ইসলামীর একক প্রার্থীও পিছিয়ে নেই। সভা-সমাবেশ করছেন তারা।
স্থানীর ভোটার ও রাজনীতি সচেতন ভোটারা বলেন, এ উপজেলায় বিএনপির প্রকাশ্যে রয়েছে তিনটি গ্রুপ। তারা নিজেরা এখন কাঁদা ছোঁড়া-ছড়িতে ব্যস্ত। তাদের গ্রুপিং রাজনীতির নিরসন না হলে জামায়াতে ইসলামী সেই যায়গাটি দখল করে নিতে পারে বলে অনেকের ধারনা। কাজে লাগাতে পারে তাদের সুযোগ।
অন্যদিকে, জুলাই বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের দল। জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপি ও জামায়েত ইসলামি দলগুলো এখনো তাদের মাঠ গোছাতে পারেনি। তবে অগ্রাসর নির্বাচনেও আসেনি ইসলামী আন্দোলন ও এনসিপির প্রার্থীও থাকবে বলে জানিয়েছে দল দুটির নেতা।
মূলত মাঠে এখন বিএনপি দুই প্রার্থী ও জামায়াতের একক প্রার্থীই নির্বাচনে জয়ী হতে গণসংযোগ করছেন বলে দেখা যায়।
যদিও এখন পর্যন্ত বিএনপি থেকে প্রার্থী হিসেবে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি। তার পরেও নিজের পক্ষে মনোনয়ন পেতে তৎপরতা চালাচ্ছেন তিনজন।
তাঁরা হলেন- ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধরণ সম্পাদক ও ডাকসুর এজিএস এবং এই আসনের তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম,অপর দিকে জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন ও সুপ্রিম কোর্টের জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সিদ্দিক উল্লাহ মিয়া।
অপরদিকে,জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী ভোলা জেলার সাবেক আমির ও বরিশাল বিভাগীয় অঞ্চল পরিচালনা টিমের অন্যতম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলান মোস্তফা কামাল।
মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম এ আসন থেকে ২০১৬ সালে ও সর্গীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। পতিত আওয়ামী সরকারের বিগত ১৫ বছর রাজপথে অসংখ্য বার হামলার শিকার হয়েছেন তিনি।
আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে নাজিম উদ্দীন আলম বলেন, আগামীতে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান অবশ্যই ভোলা (৪-চরফ্যাশন-মনপুরা) আসনে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে মূল্যায়ন করবেন বলে আশা তার।জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ২০১৮ সালে বিএনপি থেকে তিনি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে দলের নির্দেশে।
মনোনয়ন পেতে এলাকায় গত রমজান ও ঈদুল আজহায় এসে গণসংযোগ করেছেন বিএনপির দুই নেতা। প্রতিটি হাট-বাজারের পথসভায়ও সমাবেশ করেছেন তারা।
নির্বাচন ও মনোনয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে আমার প্রত্যাশ আছে, সঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের প্রতি আস্থা আছে।
তিনি আরো বলেন, ভোলা-৪ আসনের জনগণের সার্বিক কল্যাণ ও উন্নয়নের ইস্যুতে তার অনেক ভূয়শী পরিকল্পনা রয়েছে। সে সবের মধ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা,সহ অন্যতম সেবামুলক কাজ।
সুপ্রিম কোর্ট জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন আসন্ন নির্বাচনে আমি ভোলা-৪ আসন থেকে বিএনপির দলীয় মনোনয়নে পাওয়ার ব্যাপারে আমি আশবাদী হয়ে আমার এলাকার হাট বাজারে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছি ।
তিনি আরো বলেন আমি এই এলাকার মানুষের স্বার্থে স্বাস্থ্যসেবা,নদী ভাঙ্গন রোধ,যোগাযোগ ব্যবস্থা,বিদ্যুৎ ব্যবস্থার সচোনীয় অবস্থা থেকে উত্তরোন ও অসহায় মহিলার ঘড় করে দেয়া ও দীর্ঘ দিন বিএনপি নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক মামলা বিনামূল্যে পরিচালনা করেছি।
এছাড়াও মসজিদ মাদ্রাসায় তার ব্যাপক অনুদান রয়েছে বলে জানা যায় এলাকা সূত্রে।
আরো অনেক জনকল্যাণ মূলক কাজের জন্য সুপারিশ করে দিয়েছি তিনি।সুযোগ হলে চরফ্যাশন ও মনপুরার অবহেলিত মানুষের জন্য আরো কিছু করতে চান অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সিদ্দিক উল্লাহ মিয়া।
এছাড়াও জামায়াতে ইসলামীর ভোলা জেলার সাবেক আমির ও বরিশাল বিভাগীয় অঞ্চল পরিচালন তিন সদস্য অধ্যক্ষ মাওলান মোস্তফা কামনা বিগত ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমনে সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন একাধিকবার গ্রেপ্তার ও জেল খেটেছেন তিনি।
নির্বাচনি এলকার প্রতিটি ইউনিয়নে গত মাহে রমজান ইফতার মাহফিলে যোগ দিয়েছেন তিনি। এখনো সভা, সমাবেশ ও প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। জামায়াত প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা মোস্তফা কামাল নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, বিগত সময় যারা এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, তারা জনগণের জন্য কি করেছেন সবাই তা জানে।
আমি নির্বাচিত হতে পারলে জনগণের সব মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হবে। হিন্দু, মুসলিমসহ সব ধর্মের লোকদের নিরাপত্তার বিধান নিশ্চিত করা হবে। মনোয়ন যুদ্ধে বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশীর মধ্যে কে পাবেন টিকিট এটা কেউ সঠিক করে বলতে না পারলেও আগামী নির্বচনে এ আসনটিতে বিএনপি ও জামায়াত এ দুই দলের মধ্যে হবে লড়াই এমনটাই মনে করেন এ আসনের অধিকাংশ ভোটার।
বরিশাল বিভাগের ২১টি আসনের মধ্যে ভোলা-৪ (চরফ্যাশন-মনপুরা) হেভিওয়েটদের আসন হিসেবে বেশি বিবেচিত। এ আসনে সবসময় হেভিওয়েট প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসছেন।