১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

জনপ্রিয় শিক্ষক গৌর চন্দ্র পাল আর নেই।

বাংলা বারুদ
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫, ০৬:১৫ অপরাহ্ণ
জনপ্রিয় শিক্ষক গৌর চন্দ্র পাল আর নেই।

Manual6 Ad Code

গৌরাঙ্গ বিশ্বাস:বিশেষ প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার শিক্ষাঙ্গন ও সংস্কৃতিচর্চার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র নিভে গেল। এলাকার সর্বজন শ্রদ্ধেয়, জনপ্রিয় শিক্ষক গৌর চন্দ্র পাল (গৌর মাস্টার) আর আমাদের মাঝে নেই।

বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি আজ মঙ্গলবার নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । গৌর চন্দ্র পাল তাঁর দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে বল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইছাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং খিলদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

পরবর্তীতে তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে বর্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন এবং ২০০২ সালে সেখান থেকেই অবসর গ্রহণ করেন।

Manual4 Ad Code

শিক্ষকতা জীবনে তিনি শুধু শিক্ষার্থী নয়, অভিভাবক এবং সহকর্মীদের কাছেও অশেষ সম্মান অর্জন করেছিলেন। শিক্ষা জীবনের পাশাপাশি তিনি সংস্কৃতিচর্চায় ছিলেন গভীরভাবে নিবেদিত। তিনি আজীবন নাটক ও থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং বিভিন্ন চরিত্রে অসাধারণ অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন।

Manual7 Ad Code

একজন গুণী শিল্পী হিসেবে কালিহাতীর সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তাঁর অবদান ছিল অমলিন। অবসর গ্রহণের পরেও তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি টান ছেড়ে যেতে পারেননি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি উপজেলা সদরে ইসলামিক কিন্ডার গার্ডেনে গান শেখানোর শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

২০১৮ সালে তিনি কেন্দ্রীয় সাধুসংঘের সাধু পরিষদের একজন সাধু হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন, যা তাঁর ধর্মপরায়ণতা ও মানবিক জীবনের অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

Manual6 Ad Code

গৌর মাস্টার ছিলেন গভীরভাবে ধর্মপ্রাণ, বিনয়ী ও মানবিক মানুষ। দরিদ্র, অসহায় ও অভাবগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোই ছিল তাঁর জীবনের অন্যতম নীতি।

Manual7 Ad Code

তাঁর চলে যাওয়া কালিহাতীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি অঙ্গনে এক অপূরণীয় ক্ষতি, যা সহজে পূরণ হবার নয়। তিনি দুই ছেলে, তিন মেয়ে, অসংখ্য নাতি-নাতনি এবং বহু আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন।

পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি তাঁর অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী, সহকর্মী, ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীরা আজ গভীর শোকাভিভূত।

মানবিক গুণাবলী, শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে নিবেদিতপ্রাণ এই মহৎ মানুষটির শূন্যতা কালিহাতী দীর্ঘদিন অনুভব করবে। এলাকার মানুষের মুখে মুখে একটাই কথা— “গৌর মাস্টারের মতো গুণী শিক্ষক ও সৎ মানুষ আর নেই।”