১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

শ্লীলতাহানির পর বাস থেকে ফেলে দেওয়া হলো কুবি শিক্ষার্থীকে, গ্রেপ্তার ২

বাংলা বারুদ
প্রকাশিত আগস্ট ২৩, ২০২৫, ০৫:২২ অপরাহ্ণ
শ্লীলতাহানির পর বাস থেকে ফেলে দেওয়া হলো কুবি শিক্ষার্থীকে, গ্রেপ্তার ২

Manual4 Ad Code

মোঃ ইকবাল মোরশেদ, স্টাফ রিপোর্টার

Manual2 Ad Code

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী চট্টগ্রামগামী লোকাল সেন্টমার্টিন পরিবহনের বাসে শ্লীলতাহানি ও ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন।

এসময় অভিযুক্তরা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে বাস থেকে ফেলে দেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনের মধ্যে দুইজনকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

গতকাল শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। আটক হওয়া অভিযুক্ত দুইজনের একজনের নাম মো. আলী হোসেন। তার গ্রামের বাড়ি বরুড়া। অন্যজন হলেন মোহাম্মদ আলী। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ।

Manual6 Ad Code

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠী সূত্রে জানা যায়, তিনি আলেখারচর থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার উদ্দেশ্যে সেন্টমার্টিন বাসে উঠেন।

Manual1 Ad Code

এসময় বাসে কোনো যাত্রী না থাকায় পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড যাওয়ার পথে গাড়িতে থাকা হেলপার ও তার সহযোগী আরো দুইজন তার হাত-পা বেঁধে পেলেন এবং তার গলায় থাকা সোনার চেইন ছিনিয়ে নেন। এসময় তার সাথে যৌন হয়রানির পাশাপাশি তাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে গাড়ি থেকে ফেলে দেয়।

Manual8 Ad Code

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাস থেকে একজনকে পড়ে যেতে দেখে তারা বাস আটকান। এসময় গাড়িতে থাকা ৫ জন থেকে তিনজন পালিয়ে যান। বাকি দুইজনকে আটক করে রাখেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আসলে অভিযুক্তদের মারধর করেন।

স্থানীয়রা পুলিশকে কল দিলে তারা এসে ২ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যেতে চান। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে নিয়ে বিচার করতে চান এমনটা বললে পুলিশের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। শিক্ষার্থীরা জানান, ভুক্তভোগীর কল পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে আসেন এবং অভিযুক্তদের বিচার চান। তবে পুলিশ প্রশাসন সঠিক কোনো সিদ্ধান্ত দিতে না পারায় তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এসময় অভিযুক্তদের বহনকারী পুলিশের গাড়িও শিক্ষার্থীরা আটকে রাখেন। পরে সেন্টমার্টিন পরিবহনের দুইটি বাস বিশ্ববিদ্যালয়ে আটক করে রাখেন। শিক্ষার্থীদের অবরোধের ফলে রাস্তার দুইদিকে প্রায় ২০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়।

পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপার এসে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনায় বসেন। আলোচনার পর অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চয়তার আশ্বাস পেয়ো শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিলেও বিকেল ৫ টা পর্যন্ত যানজট লেগে থাকে।

সদর দক্ষিণ উপজেলার এসিল্যান্ট সজীব তালুকদার বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ স্বীকার করে আসামীরা স্বাক্ষর দিয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়া খানম বলেন, যে দুইজনকে আটক করা হয়েছে আমরা মোবাইল কোর্ট অনুযায়ী দুই বছরের জেল দিয়েছি। বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের ব্যবস্থা করা হবে। ভিক্টিমের যে ক্ষতি হয়েছে তা আটককৃত বাসের মালিকদের কাছ থেকে আদায় করা হবে।

উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর মোঃ হায়দার আলী বলেন, নির্বাহী মেজিস্ট্রেট ২ বছরের জেল দিয়েছে। যা অজামিন যোগ্য। পুলিশ প্রশাসন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাকি ৩ জন কে অ্যারেস্ট করবে। একমাসের মধ্যে মামলার চার্জশিট প্রধান করবে । এছাড়াও ছিনতাই, হত্যা ও ধর্ষণের চেষ্টা পুলিশ পৃথকভাবে খতিয়ে দেখবে। এই মামলার নিয়মিত আপডেট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিবে।

ঘটনাস্থলে কুমিল্লা পুলিশ সুপার উপস্থিত হয়ে অসুস্থতার কথা বলে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। এ বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।