
একজন ভণ্ড সাংবাদিকের প্রতি—একটি খোলা চিঠি
প্রিয় মিস্টার তিতুমীর সাহেব:
সাংবাদিক সমাজের একজন সদস্য হিসেবে আমি গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে আপনাকে এই খোলা চিঠি লিখছি। কারণ আপনার একের পর এক কর্মকাণ্ড, বক্তব্য ও সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচারের ধরণ দেখে আমরা যারা সত্যিকারের সাংবাদিকতা করতে চাই, তারা লজ্জিত ও ক্ষুব্ধ।
আপনি সম্প্রতি দাবি করেছেন, আপনি সাপ্তাহিক অভিযোগ পত্রিকাটি হাসান সাহেবের বাবার কাছ থেকে কিনেছেন। প্রশ্ন জাগে—যদি তিনি একজন অফিস সহায়ক হন, তবে তার মাধ্যমে একটি পত্রিকার মালিকানা হস্তান্তর কীভাবে সম্ভব হলো? বিষয়টি নৈতিকতা, যুক্তি এবং আইন—তিনটির সাথেই সাংঘর্ষিক।
আপনার কর্মকাণ্ড বারবারই প্রমাণ করে যে, আপনি একজন সুবিধাবাদী ও দ্বিচারী চরিত্রের মানুষ। দৈনিক স্বাধীন ভাষা পত্রিকার সম্পাদকের ব্যক্তিগত পোস্ট শেয়ার করে তাকে আপনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে তুলে ধরেছেন। অথচ সেই পত্রিকায় আপনাকে সুযোগ না দেওয়ার পর আপনি আচরণ বদলে ফেলে ফেসবুকে অপপ্রচার শুরু করেছেন। এমন দ্বিমুখী আচরণ কি একজন পেশাদার সাংবাদিকের কাছ থেকে কাম্য?
আপনার বিরুদ্ধে সরকারি কাগজপত্র জালিয়াতির একাধিক অভিযোগ রয়েছে, যার প্রমাণ সাংবাদিক মহলের হাতে রয়েছে। আপনি একের পর এক জেলার সাংবাদিকদের সঙ্গে বিরোধে জড়াচ্ছেন—গাইবান্ধা, গাজীপুর, রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, পাবনা, এমনকি ময়মনসিংহ পর্যন্ত। প্রশ্ন হলো—সারা দেশের সাংবাদিকদের সঙ্গে যদি শুধু আপনারই বিরোধ হয়, তবে দোষটা কার?
আপনার রাজনৈতিক ইতিহাস নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। আপনি অতীতে একটি প্রভাবশালী দলের ছত্রচ্ছায়ায় চলেছেন, সুযোগ নিয়েছেন। আজ সেই দল জনসমর্থন হারালে আপনি সাংবাদিকতার আড়ালে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করছেন। এটা কি সততার পরিচয়?
সম্প্রতি আপনাকে দেখা গেছে দৈনিক বৈষম্যমুক্ত সম্পাদক বিপ্লব আহমেদ এবং দৈনিক ক্রাইম তালাশ সম্পাদক মাহমুদ কবির নয়নের বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর পোস্ট দিতে। তারা আপনাকে উপদেষ্টা হিসেবে না রাখায় আপনি প্রতিশোধের পথ বেছে নিয়েছেন।
আপনার প্রতিষ্ঠিত তথাকথিত জাতীয় অনলাইন প্রেস কাউন্সিল নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এটি কি প্রকৃত সাংবাদিকদের সংগঠন, নাকি আপনার ব্যক্তিগত স্বার্থে পরিচালিত একটি মুখোশ?
আপনি যদি দাবি করেন সত্যিকারের সাংবাদিক, তাহলে আইন ও প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন। কেউ অন্যায় করলে সামাজিক মাধ্যমে অপদস্থ না করে আদালতের দ্বারস্থ হোন। ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে কাউকে সামাজিকভাবে অপমান করা সাংবাদিকতার চর্চা নয়—এটা হয় সস্তা পাবলিসিটি।
আমাদের কাছে আপনার এবং আপনার সহযোগীচক্রের অনেক তথ্য রয়েছে। আপনি আর কতজন সাংবাদিককে অপমান করবেন? আর কতজনের সঙ্গে আপনার বিরোধ হবে? সাংবাদিকতা কোনো নাটক নয়, এটি একটি দায়িত্ব ও সততার পেশা। এই পেশাকে কলুষিত করবেন না।
খুব শিগগিরই আপনাদের মুখোশ উন্মোচন হবে—এই আশায় রইলাম।
সততার পক্ষ থেকে,
একজন দায়িত্বশীল সাংবাদিক
লেখক : সাংবাদিক ও সম্পাদক : বিপ্লব আহমেদ
